লিগ্যাল এইড বনাম বিচারে প্রবেশাধিকার ও আপোষের নিশ্চয়তা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
লিগ্যাল এইড বনাম বিচারে প্রবেশাধিকার ও আপোষের নিশ্চয়তা

মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম : আগস্ট ২৪ বিপ্লব পরবর্তী বর্তমান সরকার কোনো বিচারপ্রার্থী যেন হয়রানির শিকার না হন এবং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন সে বিষয়ে জনগণকে নিশ্চয়তা দিতে সংবিধানসহ বিচার বিভাগ সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মূল সংবিধান তথা ১৯৭২ সালের সংবিধান এবং বিদ্যমান সংবিধানে এটার প্রতিফলন প্রত্যক্ষ করা যায়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং আগস্ট বিপ্লবের পরে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সারাক্ষণ ভাবছেন কীভাবে ভঙ্গুর অর্থনীতি ও আগস্ট বিপ্লবের পরে বিধ্বস্ত দেশকে সাজাবেন। এর মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ‘সংবিধান’ ও তার সংষ্কার নিয়ে ভাবনা ছিল অন্যতম। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিটির সাথে একাধিকবার আলোচনা করেন। শোষণমুক্ত যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বর্তমান সরকার ও নতুন প্রজন্ম দেখে আসছে তার দীর্ঘ সংগ্রাম ও বর্তমান রাজনীতিতে সেটার প্রতিফলন সংবিধান নিশ্চিত করে। এ জন্য একটি শক্তিশালী স্বাধীন বিচারব্যবস্থা জরুরী ।

১৯৭২ সালের প্রণীত সংবিধানে তার স্বপ্নের সেই প্রতিফলনও ছিল, যেখানে স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিল তবে সংবিধান এবং আইন মাফিক সবকিছু ঠিক মতো চলেনি। স্বৈরাচারের থাবা বারবার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা বাঁধাগ্রস্থ করেছে। প্রতি বছর ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সাহয়তা দিবস পালন হয়ে আসছে । এবার আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী সরকার দিবসটি পালন করার জন্য ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পালিত হয়েছে। প্রতিপাদ্য ছিল দ্বদ্ব কোন শান্তি নাই আপোষ হলে শান্তি পাই সবসময় লিগ্যাল এইড অফিসকে পাশে পাই। মানুষ যাতে কোন অন্যায়ের শিকার না হয় এবং ন্যায় বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। গত ১০ বছরে প্রায় ১২ লাখ ৭০ হাজার ৪৪ জন দরিদ্র-অসহায় মানুষকে বিনা মূল্যে আইনগত সহায়তা দিয়েছে সরকার। ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় আইন সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে এটি করা হয়। একই সময়ে সংস্থাটি ৫ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৪২২ দরিদ্র-অসহায় মানুষকে ক্ষতিপ‚রণ আদায় করে দিতে সক্ষম হয়েছে। গতবছর ২৭ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সবচেয়ে বেশি আপোষ করে সেরা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা হয়েছে ঝিনাইদহ জেলা বিজ্ঞ কর্মকর্তা। তাকে দেশবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন। জাতীয় আইন সহায়তা প্রদান সংস্থা বিগত ১০ বছরে ৬৪টি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জনকে, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ২০ হাজার ৯২ জনকে, জাতীয় হেল্প লাইন কল সেন্টারের ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন কলের মাধ্যমে ৮৩ হাজার ৯১৮ জনকে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলের মাধ্যমে ১৮ হাজার ২০৭ জনকে আইনগত সহায়তা দিয়েছে।

একই সময়ে সংস্থাটি এক লাখ ২৬ হাজার ৪৯২টি লিগ্যাল এইড মামলা নিষ্পত্তি করেছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমান আইন উপদেষ্টা নির্দেশনায় জাতীয় আইন সহায়তা প্রদান সংস্থার জাতীয় হেল্প লাইন কল সেন্টার (১৬৪৩০) বর্তমানে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হয়েছে। আইনি সহায়তা গ্রহণ সহজ করার লক্ষ্যে পূর্ববর্তী সরকার ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল এ কল সেন্টার উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে অফিস চলাকালীন এ কল সেন্টার থেকে আইনি পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারী থেকে শুরু করে জুলাই আগস্ট বিপ্লবের সময় উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতেও কল সেন্টার ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হয়েছে। বিচার বিভাগ সংষ্কার নিয়ে বর্তমান সরকার চিন্তার গভীরতা বিভিন্ন সময়ে সংষ্কার কার্যক্রমে প্রতিভাত হয়েছে। সবার জন্য ন্যায়বিচার, মামলার যেন দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি না হয় এবং আইনের চোখে সবাই যেন সমান হয়, সেসব বিষয়ের গুরুত্ব তিনি সংবিধানে দিতে বলেছিলেন। আমরা জানি আদালতে যাতায়াত অর্থ ও সময়ের অপচয়। এ বিষয়টি আমাদের মনে করিয়ে দেয় শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এখনই উপযুক্ত সময়।

সংবিধান যে কোনো দেশের শাসনযন্ত্র পরিচালনার মূল আইন। লিখিত অথবা অলিখিত যে প্রকৃতিরই হোক না কেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশের সাংবিধানিক দিকনির্দেশনা ব্যাপক তাৎপর্য বহন করে। সংবিধানের আলোকেই একটি দেশের নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং সংসদ বা আইনসভা পরিচালিত হয়। সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে। সংবিধানের এই ভাগে বর্ণিত সব মৌলিক অধিকারই বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত এবং এসব অধিকার রাষ্ট্রের জন্য অবশ্যপালনীয়। দেশের কোনো নাগরিকের এসব মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে কী প্রতিকার পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কেও সংবিধানে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে। এছাড়া সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানে লিপিবদ্ধ কিছু বিষয় রয়েছে যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলিলে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত হলেও বাংলাদেশে মানবাধিকার হিসেবে অবশ্য পালনীয় নয়। বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৬ থেকে ৪৭ নং অনুচ্ছেদে দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রণীত এসব অধিকার নিচে লিপিবদ্ধ করা হলো: আইনের চোখে সকলে সমান এ বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’ আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকারই ম‚লত অ্যাকসেস টু জাস্টিস বা বিচারে প্রবেশাধিকার। রাষ্ট্রীয় এই ব্যবস্থাপনায় সকল নাগরিকের সমান প্রবেশাধিকার (অ্যাকসেস টু জাস্টিস) নিশ্চিত করা এবং সকলে যেন এসব অধিকার বাধাহীনভাবে ভোগ করতে পারে তার নিশ্চয়তা প্রদান করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

Access to Justice এর বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ‘আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যেকোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।’ ১৯৭০ এর দশকে Italian Jurist Mauro Cappelletti একটি রিসার্চে বলেন, Access to Justice এর উদ্ভব হয় নতুন নতুন সামাজিক অধিকারের সাথে। কার্যকর বা ফলপ্রস‚ Access to Justice দেখা যায় মৌলিক প্রয়োজন হিসেবে, মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে যা আইনগত অধিকার নিশ্চিত করে। ১৯৪৮ সালের Universal Declaration of Human Rights (UDHR)-এ স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, সব মানুষ আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং কোনো বৈষম্য ব্যতিরেকে প্রত্যেকেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। উক্ত ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, কাউকে খেয়াল-খুশিমতো গ্রেপ্তার বা আটক করা যাবে না এবং নিরপেক্ষ ও প্রকাশ্য শুনানির মাধ্যমে উপযুক্ত আদালত কর্তৃক বিচার পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির থাকবে। এই ঘোষণায় আরও বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তি উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দোষ ব্যক্তির ন্যায় আচরণ পাওয়ার অধিকারী হবে।

Commonwealth of Independent States Conventions on Human Rights and Fundamental Freedoms ১৯৯৫ অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক মানুষ সমান এবং প্রত্যেকেই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালতে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে ন্যায় প্রতিকার পাওয়ার অধিকারী। এর অর্থ এই যে, আন্তর্জাতিক আইনে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য আইনগত সহায়তা প্রদানের বিষয়টি স্বীকৃত এবং এসব বিধান বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। এছাড়া, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ দ্বারা সকল নাগরিককে আইনের দৃষ্টিতে সমান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে প্রত্যেকেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। অনুচ্ছেদ ৩১ উক্ত বিধানকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং ৩৩ অনুচ্ছেদ ফৌজদারি বিষয়ে জনগণের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে। অতএব, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বাংলাদেশ সংবিধান সর্বোত্তমভাবে প্রত্যেক জনগণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ করতে বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে স্বীয় মৌলিক অধিকার রক্ষার সুযোগ দিয়েছে। কারও মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে আদালতের মাধ্যমে তা বলবৎ করা যায়। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “(১) এই ভাগে প্রদত্ত অধিকারসম‚হ বলবৎ করিবার জন্য এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মামলা রুজু করিবার অধিকারের নিশ্চয়তা দান করা হইল। (২) এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ঐ সকল বা উহার যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।” বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে বীজ রোপিত হয়েছিল তা ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টির মাধ্যমে পূর্ণতা পায়। ২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট স্বৈরাচার মুক্ত হয়। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাই ম‚লনীতি হবে নাকি বর্তমান সংবিধানের সংস্কার কমিটির সুপারিশসম‚হের আলোকে ম‚লনীতি নতুন করে করা হবে কিনা সে বিষয় সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রতিবেদন আলোচনা পর্যালোচনা চলছে। ত্রিশ লাখ শহীদের তাজা রক্ত এবং জুলাই আগস্ট বিপ্লবে হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী এ রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা; যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক-সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।
কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসাবে সকল নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বর্তমান জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী সরকার। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে ন্যায়বিচার পাওয়া কারও দয়ার ওপর নির্ভরশীলতা নয়-ব্যক্তির অধিকার এবং রাষ্ট্রকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যেতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী, পুরুষ, ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে জনগণ যদি আইন-আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করতে না পারে, তাহলে সেক্ষেত্রে আইনের শাসন অর্থহীন হয়ে পড়ে। আর তাই জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম প্রান্তিক গ্রাম থেকে শহর সবখানে জোরদার করা প্রয়োজন। বর্তমানে ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকার জাতীয়ভাবে আইনগত সহায়তা প্রদান করে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। এখন যদি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি দেশি-বিদেশি সংস্থা, সুশীল সমাজ ও জনগণ এগিয়ে আসে, তাহলে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বিচারে প্রবেশাধিকার (Access to Justice) ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।

লেখক: মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম,
পিএইচডি গবেষক, আইন বিশ্লেষক এবং কলামিস্ট।